কেমন চলছে অনলাইনে পড়ালেখা
কেমন চলছে অনলাইনে পড়ালেখা
আমাদের
দেশের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য অভিজ্ঞতাটা নতুন বলা চলে। করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে সরকারি নির্দেশনায় বন্ধ আছে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের
বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় তাই অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
ফেসবুক
গ্রুপ থেকে শুরু করে গুগল ক্লাসরুম, জুম, ফেসবুক মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ, হ্যাং–আউট নানা কিছুর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন শিক্ষকেরা। শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা কেমন, জানতে মুঠোফোনে ও মেসেঞ্জারের মাধ্যমে
আমরা কথা বলেছিলাম বেশ কয়েকজনের সঙ্গে। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে পাওয়া গেল মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
ক্যাম্পাস
বন্ধের কিছুদিন পরই অনলাইন পাঠদান শুরু করেছেন ঢাকার সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির বেশ কয়েকজন শিক্ষক। গুগল ক্লাসরুম ও হ্যাং–আউটের
মাধ্যমে অনেক শিক্ষক অনলাইনে পড়াচ্ছেন। উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্র সাজিদ ইমতিয়াজ বলেন, ‘আমরা যাঁরা মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আছি, তাঁরা অনেকেই একসঙ্গে চাকরি ও পড়াশোনা করছি।
এর মধ্যে করোনার কারণে সেশন জটের সৃষ্টি হলে আমাদের কর্মজীবন আর শিক্ষাজীবন দুটোতেই
ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। কিন্তু অনলাইনে ক্লাস হওয়ার কারণে সেই দুশ্চিন্তা কিছুটা কমেছে।’
কেমন চলছে অনলাইনে পড়ালেখা |
অনলাইনে
ক্লাসের অভিজ্ঞতা জানতে চাওয়া হয়েছিল ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র মুনতাসির লিমনের কাছে। কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই)
বিভাগের দশম সেমিস্টারের এই ছাত্র জানান,
নিয়মিত অনলাইনে তাঁদের তত্ত্বীয় ক্লাসগুলো হচ্ছে। লাইভ ও আগে থেকে
ধারণ করা ভিডিওর মাধ্যমে ক্লাস করছেন তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে বসে ক্লাস করার তুলনায় অনলাইন ক্লাসগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কিছুটা কম বলে জানান
তিনি। তবে যেহেতু সরাসরি ও ধারণ করা
ভিডিওগুলো অনলাইনে থাকে, তাই কেউ নির্ধারিত সময়ে ক্লাস করতে না পারলেও পরে
ভিডিওতে পুরো লেকচার দেখে নিতে পারে।
ইন্টারনেটের
ধীরগতি কিংবা উচ্চমূল্যের কারণে ক্লাসের সঙ্গে তাল মেলাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে, এমন অভিজ্ঞতার কথাও বললেন কেউ কেউ। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের
সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র নাজমুস সাকিব বলেন, ‘আমার বন্ধুদের মধ্যে অনেকের বাড়ি এমন প্রত্যন্ত এলাকায়, যেখানে ঘরে ঠিকমতো মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কই থাকে না, দ্রুতগতির ইন্টারনেট তো সেখানে কল্পনাতীত
ব্যাপার। তাই বাধ্য হয়েই তারা ঘর থেকে বেরিয়ে
মাঠে বসে ক্লাসে করছে। বাইরে এসেও মাঝেমধ্যেই তাদের সংযোগ কেটে যায়। ফলে লেকচারের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো মিস করছে অনেকে।’
ইন্টারনেটের
উচ্চমূল্য নিয়ে আফসোসের কথা বললেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী শবনম মোস্তারী। তিনি জানান, এক গিগাবাইট ইন্টারনেট
প্যাকেজ দিয়ে সর্বোচ্চ দুটি অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে পারছেন তিনি। ফলে গড়ে প্রতিদিন দু–তিনটি ক্লাসের
জন্য প্রায় এক থেকে দেড়
গিগাবাইট ইন্টারনেট কিনতে হয় তাঁকে। তাঁর
মতে, প্রতিদিন এক থেকে দেড়
গিগাবাইট ইন্টারনেটের প্যাকেজ কেনা অনেকের জন্য বেশ ব্যয়বহুল। শবনম যোগ করলেন, ‘ইন্টারনেটের প্যাকেজ কিনতে হলে ফোনে টাকা ভরতে হয়। দেখা যায় একসঙ্গে অনেক টাকা ভরে রাখলে ইন্টারনেট প্যাকেজ শেষ হয়ে গেলে ফোনের টাকাও শেষ হয়ে যায়। তখন আবার টাকা ভরার জন্য বাসা থেকে বেরোতে হয়। মোবাইল ফোন সংযোগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো যদি আমাদের জন্য এই সময়ে একটা
সহজ কোনো পদ্ধতি রাখত, তাহলে ভালো হতো।’
এদিকে
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ চতুর্থ সেমিস্টারের ছাত্রী মাহলাকা মুর্শেদ বলেন, করোনা–আতঙ্কের মধ্যে অনলাইনে ক্লাস বা পরীক্ষায় অংশ
নিতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়ছিলেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা তো আছেই। তাই
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় তাঁদের অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষা কার্যক্রম
স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা বিবেচনা করে অনলাইন ক্লাস বন্ধ রেখেছে অধিকাংশ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও।
‘আমার বন্ধুদের মধ্যে অনেকের বাড়ি এমন প্রত্যন্ত এলাকায়, যেখানে ঘরে ঠিকমতো মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কই থাকে না, দ্রুতগতির ইন্টারনেট তো সেখানে কল্পনাতীত ব্যাপার। তাই বাধ্য হয়েই তারা ঘর থেকে বেরিয়ে মাঠে বসে ক্লাসে করছে। বাইরে এসেও মাঝেমধ্যেই তাদের সংযোগ কেটে যায়। ফলে লেকচারের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো মিস করছে অনেকে
ReplyDelete