একজোট হলেন বিশ্বনেতারা, নেই বড় দেশগুলো
একজোট হলেন বিশ্বনেতারা, নেই বড় দেশগুলো
করোনাভাইরাসের
মহামারি ঠেকাতে পরীক্ষা কার্যক্রম জোরদার, ওষুধ ও প্রতিষেধক বা
টিকা উদ্ভাবন এবং সেগুলো বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিতে এককাট্টা হয়েছেন বিশ্বনেতারা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই উদ্যোগে এশিয়া,
মধ্যপ্রাচ্য ও আমেরিকার অনেক
দেশ যোগ দিলেও যুক্তরাষ্ট্র এ জোটে নেই।
চীন, ভারত ও রাশিয়ার মতো
বড় দেশের নেতারাও উদ্বোধনী ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেননি।
সুইজারল্যান্ডের
জেনেভায় গত শুক্রবার এই
বৈশ্বিক উদ্যোগের কথা জানান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লায়েন,
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসাও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই সহযোগিতা উদ্যোগের
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য
হলো, কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সৃষ্ট রোগ) প্রতিরোধ, শনাক্ত ও চিকিৎসায় কার্যকর
টিকা, পরীক্ষাপদ্ধতি ও ওষুধ উদ্ভাবন
করা। একই সঙ্গে উদ্ভাবিত এসব টিকা, পরীক্ষাপদ্ধতি ও ওষুধ ধনী-গরিবনির্বিশেষে বিশ্বজুড়ে সবার সমান প্রাপ্তিও নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ।
ভিডিও
কনফারেন্সের শুরুতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা সবাই এমন এক হুমকি মোকাবিলা
করছি, যা কেবল একসঙ্গে
মিলেই মোকাবিলা করা সম্ভব। অভিজ্ঞতা বলছে, যখন উপকরণ প্রস্তুত থাকে, তখনো সবাই সমানভাবে তা পায় না।
আমরা এবার এমনটা হতে দিতে পারি না।’
উল্লেখ্য,
২০০৯ সালে এইচওয়ানএনওয়ান বা সোয়াইন ফ্লু
মহামারির সময় বিশ্বজুড়ে সবাই সমানভাবে টিকা পায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। সে সময় ধনী
দেশগুলো বেশি হারে টিকা কিনে ফেলায় অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলোর সব অধিবাসী টিকা
পায়নি।
ভিডিও
কনফারেন্সে এইডস, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে
বৈশ্বিক তহবিলের প্রধান পিটার স্যান্ডস বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে করোনার টিকা
পরীক্ষাপদ্ধতি ও ওষুধ যারই
প্রয়োজন, সে–ই পাবে।
এইডস প্রতিরোধের লড়াই থেকে শিক্ষা নিতে হবে। প্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যাপকভাবে জনগণের প্রাপ্তি নিশ্চিত করার আগে কোটি কোটি মানুষ মারা গেছে।’
ইউরোপীয়
কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লায়েন
বলেন, এই উদ্যোগ কেবল
(করোনা মোকাবিলায়) প্রথম পদক্ষেপ। সামনে এমন আরও পদক্ষেপের প্রয়োজন হবে।
বিশ্ব
স্বাস্থ্য সংস্থার এই উদ্যোগে এশিয়া,
মধ্যপ্রাচ্য ও আমেরিকার অনেক
দেশের নেতাই যোগ দেন। তবে চীন, ভারত ও রাশিয়ার মতো
কয়েকটি বড় দেশের নেতা
ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেননি। আর জেনেভায় যুক্তরাষ্ট্রের
মিশনের এক মুখপাত্র এর
আগে বলেছিলেন, এমন কোনো উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট হবে না তাঁর দেশ।
এক ই–মেইলে তিনি
বলেন, ‘আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কার্যকারিতা নিয়ে এখনো সন্দিহান। এই সংস্থার সার্বিক
ব্যর্থতার কারণেই এই বৈশ্বিক মহামারি
দেখা দিয়েছে।’
এর
আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিরুদ্ধে করোনা মোকাবিলায় ধীরে পদক্ষেপ নেওয়ার এবং চীনের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ তোলেন। এরপরই তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় তাঁর দেশের অনুদান বন্ধের নির্দেশ দেন।
ভিডিও
কনফারেন্সে এমানুয়েল মাখোঁ, আঙ্গেলা ম্যার্কেল, সিরিল রামাফোসা, পেদ্রো সানচেজ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতি দৃঢ় সমর্থন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। মাখোঁ শিল্পোন্নত সাত দেশের জোট জি-৭ এবং
১৯ দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের
জোট জি-২০-এর
সদস্যদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই উদ্যোগে সমর্থন
জানানোর আহ্বান জানান।
ওয়ার্ল্ডোমিটারসের
তথ্যমতে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণে গতকাল বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে প্রায় ২৯ লাখ মানুষ
সংক্রমিত হয়েছে। এর মধ্যে মারা
গেছে দুই লাখ। সুস্থ হয়েছে আট লাখের বেশি।
No comments