আটকে আছে ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি
আটকে আছে ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি
ছয়
মাস ধরে প্রাথমিক শিক্ষার উপবৃত্তির টাকা পাচ্ছে না দেশের ১
কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থী।
কবে তারা এই টাকা পাবে,
তা–ও কেউ বলতে
পারছে না। অভিভাবকেরা বলছেন, করোনাভাইরাসের এই দুর্যোগের সময়
উপবৃত্তির টাকা পেলে তাঁদের খুব উপকার হতো।
অভিযোগ
উঠেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়
এবং উপবৃত্তি প্রকল্পের কর্মকর্তারা ঠিক সময়ে কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায় এই
সংকট তৈরি হয়েছে। অবশ্য তাঁরা বলছেন, প্রকল্পটি ডিসেম্বরে শেষ হওয়ায় কিছুটা জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। এখন করোনাভাইরাসের কারণে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রক্রিয়াও আটকে আছে।
এ
বিষয়ে শেষ হওয়া প্রকল্পের পরিচালক মো. ইউসুফ আলী প্রথম আলোকে বলেন, এই সংকটের সময়
সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টি উল্লেখ করে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা আশা করছেন, খুব শিগগির জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বিশেষ সভার মাধ্যমে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হবে। তখন শিক্ষার্থীরা বকেয়া টাকাও পাবে।
প্রাথমিক
শিক্ষার বিস্তার ও মান উন্নয়নে
শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেয় সরকার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের
আওতাধীন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে উপবৃত্তি প্রকল্পের মাধ্যমে এই উপবৃত্তির টাকা
দেওয়া হয়। উপবৃত্তি দেওয়ার পর দেশে প্রাথমিকে
ঝরে পড়া কমেছে। উপবৃত্তির সুবিধাভোগী শিক্ষার্থী প্রায় ১ কোটি ৪০
লাখ। শ্রেণিভেদে শিক্ষার্থীদের ৫০ টাকা থেকে
শুরু করে ৩০০ টাকা (চার শিক্ষার্থীর পরিবার) পর্যন্ত উপবৃত্তি দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের মায়েদের নামে খোলা হিসাবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এই টাকা পাঠানো
হয়। তিন মাস করে বছরে চার কিস্তিতে এই টাকা দেওয়া
হয়।
উপবৃত্তির
টাকা না পাওয়ায় অভিভাবকেরা
বারবার খোঁজ নেন বলে জানিয়েছেন ঢাকার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে যারা পড়াশোনা করে, তাদের বেশির ভাগই দরিদ্র। এই সময়ে উপবৃত্তির
টাকা পেলে হয়তো তাদের কিছুটা সহায়তা হতো।
এ
বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের
সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন প্রথম
আলোকে বলেন, শেষ হওয়া প্রকল্পের এক কিস্তির (তিন
মাসের) টাকা দেওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব দিলে তারা জানিয়েছে, যেহেতু প্রকল্প শেষ হয়েছে, তাই টাকা ছাড় করা যাবে না। এখন আবার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ছাড়া নতুন
করে প্রকল্পের মেয়াদ গত জানুয়ারি থেকে
দেড় বছর বাড়িয়ে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত করা হচ্ছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে একনেক সভা করা যাচ্ছে না। এ জন্য প্রকল্পের
মেয়াদও বাড়ছে না। আর দেড় বছর
পর উপবৃত্তির কার্যক্রমটি রাজস্ব খাতে চলে আসবে। তখন আর সমস্যা হবে
না।
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে যারা পড়াশোনা করে, তাদের বেশির ভাগই দরিদ্র। এই সময়ে উপবৃত্তির টাকা পেলে হয়তো তাদের কিছুটা সহায়তা হতো।
ReplyDelete