করোনা যুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্রকে দেখিয়ে দিল কিউবা
করোনা যুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্রকে দেখিয়ে দিল কিউবা
কিউবার
কথা বললেই সমাজতান্ত্রিক একটি দ্বীপরাষ্ট্রের ছবি মনে ভেসে উঠবে, যারা দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে লড়েছে। কিন্তু বর্তমান বিশ্বের অচলাবস্থার জন্য দায়ী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এক অনুপম দৃষ্টান্ত
স্থাপন করেছে সমাজতান্ত্রিক দেশটি। মানবতা রক্ষার যুদ্ধে নিজেদের সাহস, দক্ষতা আর চিকিৎসাজ্ঞান নিয়ে
এগিয়ে এসেছে। করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপন্ন দেশগুলোতে চিকিৎসা সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে কিউবার চিকিৎসক ও নার্সের বিভিন্ন
দল।
শুধু
চিকিৎসা নয়, দেশটির বায়োটেকনোলজিও এখন বিশ্বের বুকে বিস্ময়। অসাধারণ জৈবপ্রযুক্তি নিয়ে কিউবা এখন এশিয়ার বুকে তাদের পদক্ষেপ রাখতে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি তাদের
সহযোগিতার রাস্তা আরও প্রসারিত করতে পারবে। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয়
অঞ্চলবিষয়ক শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক অনলাইন সাময়িকী দ্য ডিপ্লোম্যাট একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
দ্য
ডিপ্লোম্যাট লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা
দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার জাতীয়তাবাদের সম্পূর্ণ বিপরীতে একটি ছোট ক্যারিবীয় দেশ করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এ বিশ্বযুদ্ধে আন্তর্জাতিক
সংহতির এক দীপ্তিরূপে আত্মপ্রকাশ
করেছে। দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে
১৯টি দেশে মেডিকেল দল পাঠিয়ে কিউবা
একটি অসম্ভব রেকর্ড তৈরি করেছে।
করোনা যুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্রকে দেখিয়ে দিল কিউবা |
ডিপ্লোম্যাটের
প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় পঙ্গু হওয়া সত্ত্বেও কিউবা কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে
যুদ্ধে মূল ভূমিকা নিতে সফল হয়েছে। দেশটি থেকে ইতালি, অ্যান্ডোরা, অ্যাঙ্গোলা, জ্যামাইকা, মেক্সিকো, ভেনেজুয়েলাসহ ১৯টি দেশে নতুন চিকিৎসক দল পাঠানো হয়েছে।
আর্জেন্টিনা, স্পেনসহ আরও কয়েকটি দেশের অনুরোধ তাদের পাইপলাইনে আছে। এ পর্যন্ত ৯
শতাধিক চিকিৎসক ও নার্স ওই
সব দেশে তারা পাঠিয়েছে।
এর
আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি জানায়, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঘটনা যেমন বাড়ছে, তেমনি কিউবার চিকিৎসকদের চাহিদাও বাড়ছে।। বিশ্বের ৫৯টি দেশে কিউবার ২৯ হাজারের বেশি
পেশাদার চিকিৎসক কাজ করছেন। লাতিন আমেরিকা ও আফ্রিকার নিম্ন
আয়ের দেশগুলোয় বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দিতে হাজারো চিকিৎসক পাঠাচ্ছে দেশটি। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় কিউবার চিকিৎসকদের চাহিদা বেড়েছে বলে দেশটি থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মেডিকেল টিম সাহায্য হিসেবে পাঠানো হয়েছে।
দেশে
দেশে মহামারি বা ভয়ংকর স্বাস্থ্য
সংকট, ভূমিকম্পের মতো বিপর্যয়ে কিউবার চিকিৎসকদের ভূমিকা সুবিদিত। সাম্প্রতিক সময়ে হাইতির কলেরা বা পশ্চিম আফ্রিকার
ইবোলা মোকাবিলায় তাঁদের অনবদ্য ভূমিকার কথা সবাই জানে। এ ছাড়া ভেনেজুয়েলা,
নিকারাগুয়া, জ্যামাইকা, সুরিনাম ও গ্রেনাডাতেও চিকিৎসা
সহায়তা দিয়েছেন তাঁরা। এর আগে ২০০৪
সালে শ্রীলঙ্কায় সুনামি, ২০০৫ সালে পাকিস্তানের ভূমিকম্প এবং ২০০৬ সালে ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পসহ এশিয়ার সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরে কিউবার চিকিৎসকেরা সেখানে ছুটে গিয়ে অনেকের জীবন বাঁচিয়েছিলেন। ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পের শিকার মানুষকে চিকিৎসা করা মিশনের সদস্য ড. অস্কার পুতুল
তাঁদের কার্যক্রমের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘আজ কোথাও আগ্নেয়গিরির
অগ্ন্যুৎপাত, আগামীকাল একটি ভূমিকম্প, পরশু বন্যা। কিউবা সাহায্যের জন্য যেকোনো দেশে যেতে প্রস্তুত।’ কিন্তু বর্তমান কোভিড-১৯ মহামারিসহ এশিয়া
এবং বিশ্বের অন্য দেশে চিকিৎসা দল পাঠানোর কিউবার
উল্লেখযোগ্য ইতিহাসের বিষয়টি পশ্চিমা মূলধারার মিডিয়াগুলোতে খুব কমই এসেছে।
করোনা যুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্রকে দেখিয়ে দিল কিউবা |
কিউবার
চিকিৎসক দল ইতালিতে করোনা
মহামারির চিকিৎসার জন্য যাওয়ার ঘটনায় গোটা দুনিয়ায় সাড়া পড়ে যায়। কিউবা অবশ্য আগেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল অন্যতম ধনী ও শক্তিশালী দেশ
ব্রিটেনের দিকেও। করোনাভাইরাস সংক্রমিত হওয়ায় যাত্রীবাহী জাহাজ এম এস ব্রেইমারকে
যখন কোনো দেশ তাদের তীরে ভিড়তে দিচ্ছিল না, তখন কিউবাই তাদের বন্দর খুলে দেয়। জাহাজটিতে এক হাজার যাত্রী
ছিলেন।
কমিউনিস্ট
সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তায় গড়ে উঠেছিল কিউবার স্বাস্থ্যব্যবস্থা। বিশ্বে কমিউনিস্ট ব্লক ভেঙে পড়লে তার কিছু ক্ষতি হয়। আমেরিকাসহ পশ্চিমা দুনিয়ার অবরোধেও অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে। তার মধ্যেও কিউবা চিকিৎসক তৈরি করে গেছে; বিপ্লবী চিকিৎসক, যাঁরা শুধু নিজের কথা ভাবেন না। শুধু নিজের দেশের কথাও ভাবেন না। গোটা দুনিয়াটাকেই নিজের ঘর মনে করার
কমিউনিস্ট মতাদর্শের তাগিদে ছুটে চলেন নানা প্রান্তে। এ ক্ষেত্রেও তার
ব্যতিক্রম হয়নি।
করোনা যুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্রকে দেখিয়ে দিল কিউবা |
এশিয়ায় কিউবা: কোভিড-১৯ ও পরবর্তী
তিমুর
লেস্তের (পূর্ব তিমুর) সাবেক প্রেসিডেন্ট নোবেলজয়ী হোসে রামোস হোর্তা ২০০১ সালে তাঁর দেশের স্বাধীনতার পর একেবারে শূন্য
থেকে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা তৈরি করে দেওয়ার জন্য কিউবার প্রশংসা করেছিলেন। প্রেসিডেন্টের এক বিবৃতিতে রামোস
ঘোষণা করেছিলেন, ‘তিমুর-লেস্তে অনেকগুলো প্রকৃত বন্ধু পেয়েছে, তবে অবশ্যই প্রশ্ন করা যেতে পারে আমাদের জনগণের জন্য গ্যারান্টিযুক্ত স্বাস্থ্যব্যবস্থার চেয়ে আর বড় উপহার
আমরা কীই-বা পেতে পারি?
এটি কিউবার উপহার।’
ঝুঁকিপূর্ণ
জনগণের সেবা দিতে কিউবার চিকিৎসকদের সঙ্গে এখন কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায়
হাভানার মেডিকেল স্কুল থেকে স্নাতক তিমুরের কয়েক শ চিকিৎসক কাজ
করছেন। কিউবার মেডিকেল স্কুল থেকে ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৯৫০ জন স্নাতক হয়েছেন।
এ
ছাড়া কিউবার একটি অ্যান্টি-ভাইরাল চিকিৎসা, ইন্টারফেরন আলফা-২ বি, উহানের
চীনা চিকিৎসকেরা করোনাভাইরাসের চিকিৎসা করার জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছিলেন। এটা পাওয়া চীনের জন্য সহজ ছিল। কারণ চীন ও কিউবার যৌথ
বায়োটেকনোলজি উদ্যোগ চ্যাং হাইবার এটি তৈরি করেছে।
কিউবার
সিআইজিবি বায়োটেকনোলজি কেন্দ্রের জন্য কাজ করা কিউবার বিশেষজ্ঞ লুইস হেরেরা মার্তিনেজ বলেন, ‘ইন্টারফেরন আলফা-২বি রোগীর উদ্দীপনা এবং জটিলতা রোধ করে, তা না হলে
এ উদ্দীপনা শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ হতে পারে।’ উহানে রোগীদের চিকিৎসার জন্য দুটি অ্যান্টি-ভাইরাল এইচআইভি ড্রাগ, লোপিনাভির এবং রিটোনাভিয়ারের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরীক্ষাতেও এটি যুক্ত করা হয়েছে। তবে একটি গবেষণায় সতর্ক করা হয়েছে যে কোভিড-১৯
ভাইরাসের প্রাথমিক পর্যায়ে হালকা লক্ষণগুলো মোকাবিলায় কেবল ইন্টারফেরন নিরাপদে ব্যবহার করা যেতে পারে। ডেঙ্গু জ্বরের একটি মারাত্মক প্রাদুর্ভাবকে ঠেকানোর জন্য ১৯৮১ সালে কিউবা প্রথম ইন্টারফেরন ব্যবহার করেছিল।
গ্লাসগো
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কিউবার বিশেষজ্ঞ
হেলেন ইয়াফ বলেন, অতীতের ওই অভিজ্ঞতা দেশটির
উদ্ভাবনী বায়োটেক শিল্পের বিকাশের অনুঘটক হয়েছে।
হার্ভার্ড
মেডিকেল স্কুলের মেডিকেল নৃতত্ত্ববিদ অধ্যাপক পল ফারমার বলেছেন,
‘কিউবার আইপিকে (ইন্টারন্যাশনাল পেড্রো কৌরি ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল ডিজিজ)
লাতিন আমেরিকা এবং এর বাইরেও সম্মানিত
হয়েছে। হার্ভার্ডের গবেষণা হাসপাতালের চেয়ে কম বাজেটের আইপিকে
গুরুত্বপূর্ণ বেসিক বিজ্ঞান গবেষণা পরিচালনা করেছে, ভ্যাকসিন তৈরিতে সহায়তা করেছে, কিউবা এবং বিশ্বজুড়ে কয়েক হাজার গবেষককে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।’
কিউবার
জৈবপ্রযুক্তি দক্ষতা এশীয় দেশগুলোর কাছে দীর্ঘকাল ধরে আকর্ষণীয় ছিল। এর ফলে চীন,
সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডের সঙ্গে
যৌথ উদ্যোগ নিতে পেরেছে দেশটি। চ্যাংহাইবার প্ল্যান্ট ছাড়াও কিউবার বেইজিং অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন
অঞ্চলে বায়োটেক ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড নামের আরেকটি যৌথ উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে। এ ছাড়া গত
জানুয়ারি মাসে চীন-কিউবা বায়োটেকনোলজির জয়েন্ট ইনোভেশন সেন্টার হুনান প্রদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে, যেখানে কিউবার বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে কাজ হবে।
আসিয়ান
অঞ্চলে কিউবার জৈবপ্রযুক্তি
ফেব্রুয়ারিতে
থাইল্যান্ডে কোভিড-১৯ মহামারির পুরো
প্রভাবের আগে কিউবার সিয়াম বায়োসায়েন্স গ্রুপ এবং সেন্টার ফর মলিকুলার ইমিউনোলজি
(সিআইএম) ক্যানসার এবং অটো-ইমিউন রোগের চিকিৎসার জন্য যৌথভাবে অ্যান্টিবডি তৈরির ক্ষেত্রে অগ্রগতি ঘোষণা করেছিল। সিয়াম বায়োসায়েন্স জৈবপ্রযুক্তি দক্ষতার স্থানান্তর এবং চিকিৎসাসামগ্রী জন্য উৎপাদনকেন্দ্র স্থাপনের জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলে যৌথ উদ্যোগের অংশীদার হয়ে ওঠে।
সিয়াম
বায়োসায়েন্সের প্রধান নির্বাহী স্যাংপোন দেচংকিট ২০২২ সালের মধ্যে ক্যানসার, কিডনি ফেল এবং জটিল রোগগুলোর জন্য তিনটি নতুন ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রি করার
পরিকল্পনার কথা জানান। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ান ও জাপানি সংস্থার
সঙ্গে অন্য বায়োটেকনোলজির সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়। কিউবার ক্যানসারবিরোধী ওষুধ নিমোটুজুমাব বিশেষভাবে বেশ কয়েকটি সমঝোতা চুক্তিকে আকৃষ্ট করেছিল। তবে কিউবার মতো দেশের পক্ষে উদ্ভাবনী ওষুধ নিয়ে লাভজনক পশ্চিমা ওষুধের বাজারে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে করপোরেট
প্রোটোকল পাস করা অত্যন্ত কঠিন।
কিউবার
ওষুধ নিয়ে এর আগে জাপানের
দাইচি সানকেয়ো ব্যর্থ হয়েছে। তবে থাইল্যান্ড ও আসিয়ান বাজার
লক্ষ্য করে যৌথ যে মডেলে কিউবা
ও থাইল্যান্ড এগোচ্ছে, তাতে তারা সফল হতে পারে। স্যাংপনের মতে, তাদের উৎপাদিত ওষুধের দাম উন্নত দেশগুলো থেকে আমদানি করা ব্যয়বহুল ওষুধের তুলনায় অর্ধেক হবে। থাই রোগীরা কম দামে উচ্চমানের
ওষুধ ব্যবহার করতে পারবেন।
মেডিকেল
কূটনীতি সরগরম
কোভিড-১৯ মহামারি শুরুর
পর থেকে বিশ্বের ৪০টি দেশ কিউবার কাছ থেকে সাহায্য চেয়েছে। তবে বরাবরের মতোই দ্বীপরাষ্ট্রটির সমালোচনা করেছে প্রতিবেশী যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও কিউবার আন্তর্জাতিক চিকিৎসা মিশনকে ‘দাস চিকিৎসকদের কমিউনিস্ট রাষ্ট্রকে সমৃদ্ধ করার প্রয়াস’ হিসেবে চিত্রিত করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর টুইট করে বলেছে, কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের জন্য
আন্তর্জাতিক মিশনে চিকিৎসক পাঠানোর কিউবার উদ্দেশ্য হচ্ছে, আপত্তিজনক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বন্ধ করায় হারানো অর্থ পুনরুদ্ধার করা।
স্থানীয়
সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইতালির
কিউবান দলের নেতা কার্লোস পেরেজ ডিয়াজ এ ধরনের অভিযোগ
অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কেবল সহযোগিতা করতে এসেছি। ইতালি সরকার আমাদের জন্য থাকার ও যাতায়াতের আশ্বাস
দিয়েছে কিন্তু কোনো অর্থ প্রদানের বিষয়ে আলোচনা হয়নি।’ কিউবার সরকারও ফ্লাইট থেকে অর্থ আয়ের কথা বলেনি।
স্বাস্থ্যসেবা
খাতে পরিষেবা সরবরাহকারী হিসেবে বিশ্ব মঞ্চে কিউবার সুনাম রয়েছে। এমনকি তা জাতিসংঘের স্বীকৃতি
দ্বারা প্রমাণিত। কিউবার হেনরি রিভ ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল ব্রিগেড ২১টি দেশের ৩৫ লাখের বেশি
লোককে জরুরি চিকিৎসা সহায়তার স্বীকৃতি হিসেবে জাতিসংঘ থেকে পুরস্কার পায়।
‘দ্য
ডিপ্লোম্যাট’ বলছে, পুরস্কার বা আন্তর্জাতিক সুনাম
কিউবার ক্রমবর্ধমান খাবার এবং জ্বালানির ঘাটতির অভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধান করবে না। চীন ও রাশিয়ার কিছুটা
সমর্থন থাকলেও কোভিড-১৯-এর ধাক্কা
ও আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞায় কিউবাকে চড়া মূল্য দিতে হতে পারে।
তবু
তাদের প্রচেষ্টা জীবন রক্ষার সন্তুষ্টি ছাড়িয়েও লাভের মুখ দেখাতেও পারে। কোভিড-পরবর্তী ভবিষ্যতে এশিয়ার আরও অনেক দেশ কম দামে ওষুধ
উৎপাদন করতে যৌথ উদ্যোগের অংশীদার হিসেবে কিউবাকে চাইতে পারে। পাশাপাশি আরও স্থিতিশীল জনস্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তুলতে একটি দরকারি মডেল হিসেবে কিউবার দক্ষতা গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে পারে।
No comments